অনলাইন ডেস্কঃ

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ভুল ছবি প্রকাশে ক্ষমা চেয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গতকাল সোমবার ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।

গত ৩১ আগস্ট বার্তা সংস্থা রয়টার্স একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রকাশিত একটি বইয়ে দুটি ভুয়া ছবি ছাপা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ছবি দুটি রোহিঙ্গা সংকটের বলে দাবি করা হলেও সেগুলো ছিল ভিন্ন ঘটনার। এ ছাড়া অন্য একটি ছবির ক্যাপশনে ভুল তথ্য লেখা ছিল।

রয়টার্সের অনুসন্ধানে উঠে আসে, সামরিক বাহিনীর বইয়ে যে ছবিগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এবং আরেকটি তানজানিয়ার। এ ছাড়া একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে প্রবেশ করছে, যা আসলে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকছে।

সামরিক বাহিনীর সংবাদপত্র মিয়ানওয়াদি ডেইলি গতকাল সোমবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে মিয়ানমার পলিটিকস অ্যান্ড তাতমাদাও : পার্ট ওয়ান শিরোনামের বইয়ে প্রকাশিত দুটি ছবির জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাতমাদাও নামে পরিচিত।

বিবৃতিতে বলা হয়, দুটি ছবি ভুলভাবে প্রকাশিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠকদের কাছে এবং ছবিগুলোর মালিকদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তবে একটি ছবিতে ভুল ক্যাপশন দেওয়ার ব্যাপারে কিছু বলেনি সেনাবাহিনী।

মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাও হতে এবং সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গত জুলাই মাসে সেনাবাহিনীর পাবলিক রিলেশনস ও সাইকোলজিক্যাল ওয়ারফেয়ার বিভাগ বইটি প্রকাশ করে ইংরেজি ও বার্মিজ ভাষায়।

বইয়ে থাকা ৮০ ছবির বেশির ভাগই সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বিদেশিদের বৈঠকের।বইয়ে থাকা একটি সাদা-কালো ছবিতে দেখা যায়, একদল মানুষের দীর্ঘ পদযাত্রা। আর এর ক্যাপশনে বলা হয়, ব্রিটিশ উপনিবেশ মিয়ানমারের নিম্নাঞ্চল দখল করার পর বাঙালিরা দেশে (মিয়ানমারে) অনুপ্রবেশ করে।

রয়টার্স অনুসন্ধান করে জানায়, ছবিটি আসলে ১৯৯৬ সালে রুয়ান্ডার গণগত্যার মধ্যে শরণার্থীদের পালানোর সময় তোলা।

সেনাবাহিনী প্রকাশিত আরেকটি সাদা-কালো ছবিতে একদল লোককে নৌকায় দেখা যায়। আর এর ক্যাপশনে লেখা যায়, নৌপথে বাঙালিরা মিয়ানমারে প্রবেশ করছে।

এই ছবিটি আসলে ২০১৫ সালের, যখন হাজার হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি শরণার্থীরা থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার উদ্দেশে পালিয়ে যায়। মূল ছবিটি ঘুরিয়ে ও আবছা করে বিকৃত করা হয়েছে।

সম্প্রতি রাখাইনে গণহত্যা, নির্যাতন, গণধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংসহ ছয় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাকে বিচারে মুখোমুখি করার আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

-ডিকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily