শিক্ষাঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স ফলাফল প্রকাশ ও পাঠের বিষয়বস্তু ডিজিটালাইজেশন ও সংস্কার বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক লিপি আক্তার এবং একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ছাত্রদল কর্মী কানেতা ইয়া লাম-লাম সম্মিলিতভাবে আজ ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার ডাকসু মিলনায়তনে একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করেন।
এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ডঃ আসিফ হোসেন খান সহ উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জনাব সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, ডাকসু’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক জনাব সাদ্দাম হোসাইন, আইসিটি সেক্রেটরি জনাব আরিফ ইবনে আলী, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ও অংশগ্রহণকারীরা ডিজিটালাইজেশন বাস্তবায়িত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এবং সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা তুলে ধরেন এবং এর দ্রুত বাস্তবায়নের পক্ষে তাঁদের মূল্যবান মতামত প্রকাশ করেন।
বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত জ্ঞান প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। তথ্য প্রযুক্তির সাথে শিক্ষাব্যবস্থার সম্মিলন মানবজাতিকে অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিচ্ছে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি এই ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার দ্রুত বাস্তবায়ন। এর মাধ্যমে তারা দেশ বিনির্মানের পাশাপাশি বিশ্বায়নের পথে এগিয়ে যেতে পারবে ও উন্নত বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার সকল সুযোগ সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয়েই পাবে। পাশাপাশি তাদের গবেষণার ক্ষেত্র আরো উন্মোচিত হবে।
পরীক্ষার ফলাফল প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিষয়। আধুনিক শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের মতে প্রত্যেক শিক্ষার্থী “মাল্টিপল ইন্টেলিজেন্স” এর প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করবে অর্থাৎ তার উৎসাহ ও প্রতিভা অনুযায়ী জ্ঞান অর্জন করবে। কিন্তু সনাতন পদ্ধতিতে নোটিসবোর্ডে ফলাফল প্রকাশে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য অনিরাপদ থাকে। এতে তার মধ্যে হীনমন্যতা তৈরি হয়।
দক্ষতা বৃদ্ধি ও শিখনের জায়গায় তারা নম্বর/জিপিএ প্রাপ্তিকেই জীবনের ব্রত হিসেবে ধরে নেয় যাতে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। সেই সাথে তারা সহপাঠীদের সহযোগীর স্থলে প্রতিযোগি ভাবতে শুরু করে, এতে সহযোগিতামূলক শিখনের ধারনা ব্যাহত হয়। উন্নত বিশ্বে দেখা যায় ফলাফল ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেওয়া হয়, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আইডি থাকে ও তারা তাদের আই ডি ব্যবহার করে ফলাফল ও কোর্সের বিষয়বস্তু সম্বন্ধে জানতে পারে। এর ফলে অস্বস্তিকর প্রতিযোগিতা না থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনায় আগ্রহ বেড়ে যায়।
আয়োজকবৃন্দ তাঁদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমরা যদি সকল মতপার্থক্য ও ভেদাভেদ ভুলে সকলে একসাথে কাজ করতে পারি এবং শিক্ষকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাহলে আশা করি দ্রুত ফলাফল ও পাঠের বিষয়বস্তু ডিজিটালাইজেশন সম্ভব হবে ও শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাণের দাবীর বাস্তবায়ন দেখতে পাবে। সেই সাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সকল সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতারে উঠে আসবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র আইসিটি সেলের পরিচালক ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ডঃ আসিফ হোসেন খান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলাফল ও পাঠের বিষয়বস্তু ডিজিটালাইলেজশেনের ব্যপারে বলেন, টেকসই ডিজিটালাইজেশনের জন্য আমাদের যথেষ্ট সময় লাগবে। শিক্ষকদের যাবতীয় তথ্য অটোমেটেড করার কাজ চলছে। প্রতিটি ফ্যাকাল্টিতে একেকটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদর প্রতি সেশনে ৪/৫টি কোর্স থাকে। সিস্টেমগুলো কার্যকর করতে হলে এখানে ডিজিটালাইজেশন কাজের সাথে জড়িত প্রতিটি কর্মকর্তা – কর্মচারীকে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এধরণের বিভিন্ন কারনে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সময় লাগবে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজক বি. এম. লিপি আক্তার এবং কানেতা ইয়া লাম-লাম সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে একই পদে দুটো বিপরীত প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তারা বর্তমানে একই সাথে ইউএসএআইডি ও ইউকেএইড -এর যৌথ অর্থায়নে পরিচালিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের Strengthening Political Landscape (SPL) প্রকল্পের আওতায় Young Leaders Fellowship Program কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন।
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন্ এবং সকল ছাত্রপ্রতিনিধিদের সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ জানান।
-শিশির