অনলাইনঃ
ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনের দিন ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ১৩টি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। নির্বাচনের কয়েকদিন দিন আগে বনানীর একটি বাসায় বৈঠকে বোমা হামলা ও বাস পোড়ানোর পরিকল্পনা হয়।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কোন স্থানে কে বোমা হামলা করবে ও বাস পোড়াবে সেই দায়িত্বও বণ্টন করে দেওয়া হয় ঐ বৈঠকে।

বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন শিবির নেতা রেজাউল করিম ও বিএনপির প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। বাস পোড়ানো মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আদালতে কাজী রেজাউল হক বাবু ওরফে জিম বাবু নিজেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বাস পোড়ানোর এই পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রমাণও পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি মামলা ডিবি তদন্ত করছে। দুটি মতিঝিলে ও দুটি উত্তরায়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সোহেল ও সুমনকে গ্রেফতার করে। সুমন বোমা তৈরি করেন। ২০১২ সাল থেকেই তিনি এই কাজটি করে আসছেন। কে তাকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম দিয়েছে সেটিও স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করেছেন সুমন।

সুমনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পল্টন থানা এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ‘সরাসরি জড়িত’ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল শনিবার ভোরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ এদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. লিয়ন হক (৩০), কাজী রেজাউল হক বাবু ওরফে জিম বাবু (২৮) ও মো. আজাদ (২৮)। তদন্তকালে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ অগ্নিসংযোগকারীদের তিন জনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। শনিবার ভোরে পল্টন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শনাক্তকৃত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ১২ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় নয়াপল্টন বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে আকস্মিক ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কতিপয় নেতাকর্মী মিছিল বের করে। একপর্যায়ে মিছিলটি বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে এসে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ে।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও ফুটেজ এবং সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মিছিল থেকে গ্রেফতারকৃতরা তাদের সহযোগীদের সহায়তায় পল্টন বিএনপি পার্টি অফিসের বিপরীতে অবস্থিত কর অঞ্চল-১০ এর সামনে থাকা সরকারি স্টাফ বাসে অগ্নিসংযোগ করেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বিএনপির নেতৃস্থানীয় নেতাদের নির্দেশে দেশব্যাপী অরাজকতা ও সহিংসতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তারা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। অন্য শনাক্তকৃত পলাতক আসামি ও নির্দেশদাতাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ কাজ করছে। জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা জবানবন্দিতে বিএনপির এক নেতাকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ আছে, বড় কিছু ঘটাতে হবে।’

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্মকমিশনার মাহবুবুুল আলম বলেন, জিম বাবু নিজেও জড়িত এবং বনানীর সেই বাসায় বাস পোড়ানোর পরিকল্পনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের নাম ফাঁস করে বিস্তারিত তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জড়িত পলাতকদের গ্রেফতারে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

-জিএম

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily