ব্যবসা-বাণিজ্যঃ
কৃষি, চামড়া ও ঔষধ শিল্পখাতে উৎপাদিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য শনাক্তকরণ ও সঠিক সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতে এবং দেশে রকেট্রি গবেষণায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ইকোসিস্টেম তৈরির লক্ষ্যে উদ্ভাবনী আইডিয়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
এটুআই এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) কর্তৃক আয়োজিত ‘ট্রেসেবিলিটি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ এবং ‘রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ পর্যন্ত আগ্রহী উদ্ভাবকেরা স্ব-স্ব আইডিয়ার প্রস্তাবনা জমা দিতে পারবেন।
অনলাইনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার এদু’টি প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, পিএএ।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী এবং বেসিস-এর সহ-সভাপতি আবু দাউদ খান।
এটুআই প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
‘ট্রেসেবিলিটি চ্যালেঞ্জ ২০২২’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় কৃষি, চামড়া ও ঔষধ শিল্পখাতের সাপ্লাই চেইনে জড়িত প্রান্তিক পর্যায়ের অংশীজনদের খোঁজে বের করা এবং এর প্রতিটি পর্যায়ের সম্ভাব্য ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে একীভূত করা যায় এমন পদ্ধতির সন্ধান করা। যাতে খামার থেকে ভোক্তা কাছে পণ্য পৌঁছানোর পরিবহন ব্যবস্থার গতিবিধি চিহ্নিতকরণ, অনুসরণ ও শনাক্তকরণ ছাড়াও পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া, মেয়াদোত্তীর্ণসহ সব প্রয়োজনীয় তথ্য সংযুক্ত করা সম্ভব হবে।
যা ভবিষ্যতে নিরাপদ খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের টেকসই ও স্থায়ী সমাধান হয়ে উঠবে।
এই ট্রেসেবিলিটি প্রতিযোগিতায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি অথবা বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক তাদের উদ্ভাবনী সমাধান প্রস্তাবনা আকারে জমা দিতে পারবেন।
অন্যদিকে, রকেট্রি এর প্রতি আগ্রহীদের গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করা ও উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে চালু হলো ‘রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’।
মডেল রকেটের নকশা তৈরি, নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের জন্য নিরাপদ ইকোসিস্টেম তৈরির উদ্দেশ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। যা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত এর শিক্ষার্থীদের মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী করে তুলবে।
বাংলাদেশের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। এটুআই এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় এর যৌথ উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে।
‘ট্রেসেবিলিটি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ এবং ‘রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ শীর্ষক প্রতিযোগিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন http://challenge.gov.bd/।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এনএম জিয়াউল আলম, পিএএ বলেন, ব্লকচেইন ও অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনবান্ধব উদ্ভাবনী আইডিয়ার মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি খাতের উন্নয়নে দেশীয় উদ্ভাবকেরা তাদের প্রস্তাবনা জমা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
মহাকাশ গবেষণা এবং ট্রেসেবিলিটি উন্নয়নে দেশীয় উদ্ভাবকদের কাছ থেকে আসা আইডিয়াগুলোর সফল বাস্তবায়ন করতে পারলে ভবিষ্যতে এখাতে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো।
এ ছাড়াও আগামী দিনে নতুন নতুন খাতে এটুআই এধরনের আরো প্রতিযোগিতার আয়োজন অব্যাহত রাখবে, যেখানে দেশের তরুণ উদ্ভাবকেরা তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়া নিয়ে এগিয়ে আসবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, এধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে আগামীর বাংলাদেশকে বিশ্বমানের প্রযুক্তি তৈরিতে সহায়তা করবে।
উদ্ভাবনী আইডিয়া বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে এটুআই পূর্বের চেয়ে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দেশের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের পাশাপাশি একাডেমিয়ার অংশগ্রহণে এমন প্রতিযোগিতা ব্লকচেইন ভিত্তিক মৌলিক কাঠামো তৈরিতে সহায়তা করবে।
এছাড়া বিভিন্ন শিল্পখাতের উন্নয়নে উদ্ভাবনী আইডিয়া বিশ্ববাজারে দেশীয় শিল্পের নতুন বাজার তৈরি করতে সক্ষম হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে আগামীর বিশ্ব সহজ থেকে সহজতর হবে।
এ প্রেক্ষাপটে উদ্ভাবনকে অভ্যাসে পরিবর্তনে কাজ করছে এটুআই। উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে পণ্যের ট্রেসেবিলিটি নিশ্চিত করা গেলে মজুতদারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের পাশাপাশি একাডেমিয়া, নাগরিক, বাজারকে একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসে উদ্ভাবনকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলা সম্ভব।
এছাড়া উদ্ভাবনের প্যাটেন্টের বিষয়েও এটুআই সার্বিক সহযোগিতা করবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার জনাব একেএম এনায়েতুল কবির, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর-এর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এটুআই-এর ইনোভেশন ফান্ড এক্সপার্ট নাঈম আশরাফী এবং দুটি চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার ধারণাপত্র উপস্থাপন এবং সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন এটুআই-ইনোভেশন ল্যাব এর হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল।
অনুষ্ঠানটি সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন বেসিস-এর পরিচালক এ কে এম আহমেদুল ইসলাম বাবু।
এছাড়া অনলাইন এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই ও বেসিস এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং উদ্ভাবকগণ যুক্ত ছিলেন।
-শিশির