প্রযুক্তিঃ
একটি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্র্যান্ড হিসেবে টেকনো ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। এর অন্যতম কারণ
ব্রান্ড হিসেবে টেকনো কখনো এর ইনোভেশন বন্ধ করেনি।
কাজ করে গেছে ইনোভেশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের জন্য নিত্যনতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসতে।
ফলে, টেকনো আজ স্মার্টফোন ব্র্যান্ড যা অ্যান্ড্রয়েড ফোনের বাজারে ট্রেন্ড-সেটার হিসেবে সমাদৃত। নিজেদের ফোনে নতুনত্বের মাধ্যমে প্রযুক্তিপ্রেমী ব্যবহারকারীদের চাহিদা মিটিয়ে জীবনকে আর সহজ ও উপভোগ্য করে তুলতে নিরলস কাজ অব্যাহত আছে।
উদ্ভাবনের এই ধারাবাহিকতায় টেকনো এখন কাজ করছে এর কনসেপ্ট ডিভাইসে। উদ্ভাবনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি এই ব্রান্ড ফ্যান্টম আলটিমেট ২ নামের একটি কনসেপ্ট ডিভাইস উন্মোচন করেছে ট্রাই ফোল্ড ডিভাইস।
ফোল্ডেবল প্রযুক্তিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে এই ডিভাইস। টেকনো এর আগেও ফোল্ডেবল (ভাঁজযোগ্য)
প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেছে এবং বাজারে লঞ্চ করেছে, তবে এবারের ডিভাইস এক অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। আধুনিক বেশ কিছু ফিচার এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি এই ফোন ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় যোগ করবে নতুন মাত্রা।
উন্নত প্রযুক্তির সাথে উদ্ভাবনী ডিজাইনের সফল সংমিশ্রণ এই কনসেপ্ট ডিভাইসের মুল চালিকাশক্তি। ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা সবদিক থেকে উন্নত করবে এই ফোনের ডিজাইন।
৬.৪৮ ইঞ্চির আউটার স্ক্রীনটি ইনার ডিসপ্লের মতো করে ১০-ইঞ্চি পর্যন্ত প্রসারিত করা যাবে (পুরোপুরি খোলা অবস্থায়)। এছাড়া, এই ফোনে থাকছে ১,৬২০ x ২,৮৮০ পিক্সেল এবং ৪:৩ অনুপাতের রেজোলিউশন সহ থ্রিকে এলটিপিও ওলেড প্যানেল স্ক্রীন। বর্তমান বাজারে দুর্দান্ত ভিউয়িং অভিজ্ঞতার জন্য এর চেয়ে ভালমানের ডিভাইস একটিও নেই।
এই কনসেপ্ট ফোনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক এর বড় স্ক্রীন। এতো বড় স্ক্রীন থাকা সত্ত্বেও ডিভাইসটি একদম
পাতলা এবং হালকা। টেকনো’র প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দক্ষতার কারণে মাত্র ১১ মিলিমিটারের ফোল্ডেবল এই ডিভাইস
তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া, ডিভাইসটি ব্যাটারি কভারে ব্যবহার করা হয়েছে টাইটান অ্যাডভান্সড ফাইবার উপাদান; যার ফলে এর পুরুত্ব (থিকনেস) মাত্র ০.২৫ মিলিমিটার।
এছাড়া, এই ডিভাইসের উদ্ভাবনী ডুয়াল-হিঞ্জ মেকানিজম ব্যবহারকারীদের স্ক্রিন ক্রিজিংয়ের চাপ কমাতে সহায়ক এবং তিন লক্ষ বার হিঞ্জ পরীক্ষা করা হয়েছে ল্যাবে। এই ধরনের উন্নত প্রযুক্তির কারণে, ব্যবহারকারীরা চমত্কার
অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন। এই ডিভাইসের শক্তিশালী এবং ফ্লেক্সিবল হিঞ্জের সাহায্যে ডিভাইসটি টেন্ট মোড (মুখোমুখি কথোপকথন) এবং ল্যাপটপ-স্টাইল সেটআপ সহ বিভিন্ন মোডে ব্যবহারকারীরা নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবেন।
এই ডিভাইসের সাহায্যে ইউজার নিজের কর্মদক্ষতা কয়েকগুন বাড়াতে পারবেন। এই ফোল্ডেবল ডিভাইস নিজের কাজের ধরন মতো ব্যবহার করা যাবে। আপনার যদি নোট নিতে হয় বা মিটিংয়ে যোগ দিতে হয়, তাহলে এটিকে ভাঁজ করে একটি স্ক্রিন কীবোর্ড (ল্যাপটপ মোড) হিসেবে ব্যবহার করা যাবে; যোগাযোগের ক্ষেত্রে টেন্ট মোডে ডুয়াল-স্ক্রিন (রিয়েল-টাইম এআই অনুবাদ সুবিধা সহ) এবং মাল্টি-টাস্কাররা (একসাথে অনেক কাজ করতে ভালবাসেন এমন ব্যবহারকারী) মাল্টি-উইন্ডো মোডে একসাথে অনেকগুলো কাজ, যেমন- মেসেজিং, ব্রাউজিং এবং গেমিং করতে পারবেন খুব অনায়েসে।
এখানেই শেষ নয়। ওলেড টাচ এবং ডিসপ্লে ড্রাইভার ইন্টিগ্রেশন (টিডিডিআই) প্রযুক্তির সাহায্যে ফ্যান্টম আলটিমেট ২ ডিভাইসে ডিসপ্লে ড্রাইভার এবং টাচ সেন্সরকে একটি চিপে একীভূত করা হয়েছে; ফলে ফোল্ডেবল ডিভাইসেও এখন আপনি স্ক্রিন নিজের ইচ্ছেমতো নাড়াচাড়া (হোভারিং) করতে পারবেন। এই সেটআপে আপনি একটি স্ক্রীন কীবোর্ড হিসেবে এবং অন্যটি ডিসপ্লে হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এভাবে এই ডিভাইসের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী নিজের প্রয়োজনীয় কাজ খুব সহজে করতে পারবেন। এই ট্রাই-ফোল্ড ফোনের মাধ্যমে একসাথে একাধিক অ্যাপ্লিকেশন চালানো সম্ভব। নিজের কর্মক্ষমতা এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এই অত্যাধুনিক স্মার্টফোন।
তিনটি স্ক্রিন থাকা সত্ত্বেও, ডিভাইসটি হবে আরামদায়ক এবং কমপ্যাক্ট। প্রযুক্তিপ্রেমীদের মাঝে এখন বহুমাত্রিক
কাজ করা যায় এবং সহজে বহনযোগ্য এমন ডিভাইসের চাহিদা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে টেকনো একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এক কথায়, কম্প্যাক্ট এই ডিভাইসে থাকবে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ফিচার, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ এবং কার্যকরী সফ্টওয়্যারের মিশেল। ফলে, আপনি একজন প্রযুক্তিবিমুখ মানুষ হলেও এই ফোনের প্রেমে পড়তে বাধ্য।
কমপ্যাক্ট কম্পোজার থেকে শুরু করে বড় স্ক্রীনের অভিজ্ঞতা কী নেই টে কনো ফ্যান্টম আলটিমেট ২ ট্রাই-ফোল্ড ফোনে। ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের ল্যান্ডস্কেপে নতুন চমক নিয়ে আসবে এই ডিভাইস। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি থেকে অনুপ্রাণিত (ফিউচারিস্টিক) এই ডিভাইসটি আগামী বছর বাজারে শো করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
-শিশির