শিক্ষাঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অপসারণের দাবিতে তৃতীয় দিনের সর্বাত্মক ধর্মঘট চলাকালে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’র অন্যতম নেতা ও ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়ের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে আন্দোলনকারীদের পূর্ব ঘোষিত সর্বাত্মক ধর্মঘট পালনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মহিবুর রৌফ শৈবালের ‘নেতৃত্বে’ এ হামলা হয়েছে বলে জানান হামলার শিকার নজির আমিন চৌধুরী জয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, সকাল থেকেই সহকারী প্রক্টরের মহিবুর রৌফ শৈবাল কর্মচারীদেরকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষদে আন্দোলনকারীদের মারা তালা অপসারণ করতে যান। এসময় পুরাতন কলা অনুষদে তালা অপসারণ করতে গেলে আন্দোলনকারীদের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
পরবর্তীতে নিজের বিভাগের জুনিয়র শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর উপর হামলা করেন মহিবুর রৌফ শৈবাল। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মহিবুর রৌফ শৈবাল বলেন, ‘তাদের উপরে হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। উল্টো আন্দোলনকারীরা আমার উপর হামলা করেছে।’
মহিবুর রৌফ শৈবালের বরাতে সহকারী প্রক্টর মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের হামলায় শৈবাল অনেক বেশি অসুস্থ। আমাদের মেডিকেলে চিকিৎসা হয়নি উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবন থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি বিভিন্ন অনুষদ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদিক্ষণ করে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চে’ গিয়ে শেষ হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর উপর হামলার ব্যাপারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘একজন সহকারী প্রক্টরের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তার একটা ভিডিও দেখে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি একজন শিক্ষক তার ছাত্রের উপর কিভাবে হামলা করতে পারে। একজন মাস্তান শিক্ষক আমরা চাই না। একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের উপরে হামলা হতে পারে এটা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্চক ঘটনা। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
অন্যদিকে কর্তব্যরত সহকারী প্রক্টরের উপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’। সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিবাদলিপিতে তারা কর্তব্যরত অবস্থায় সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবালের উপর হামলার নিন্দা ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করা হয়।