অনলাইনঃ
আন্দোলনের মুখে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাদের মজুরি ১০২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এতে করে এসব শ্রমিকদের বেতন ১৮ টাকা বৃদ্ধি পেলো। এই চুক্তি কার্যকরে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সকল বর্ধিত মজুরি পাবেন চা শ্রমিকরা।
চা শ্রমিকদের বকেয়া হিসেবে আপাতত ৩ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলেও জানা গেছে। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাখন লাল কর্মকার এই তথ্য জানান।
জানা গেছে, ১৫ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শ্রীমঙ্গলস্থ প্রফিডেন্ট ফান্ড অফিসে মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও চা বাগান মালিকপক্ষের সংগঠন ‘বাংলাদেশি চা সংসদ’র নেতৃবৃন্দের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। টানা ১১ ঘণ্টার বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তে আসা হয়।
আরো জানান গেছে, ওই বৈঠকে দুর্গাপূজার আগেই চা শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে নতুন মজুরি প্রদানের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। আর চা সংসদীয় নেতৃবৃন্দ বর্তমান চায়ের বাজারের অবস্থা তুলে ধরে তার ওপর ভিত্তি করে নতুন মজুরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার হবে বলে জানান।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সভাপতি মাখন লাল কর্মকার, সহ-সভাপতি পঙ্কজ কুন্ড ও বালিশিরা ভ্যালি কার্যকরী কমিটির সভাপতি বিজয় হাজরাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাম ভোজন কৈরি। এদিকে বাংলাদেশি চা সংসদের পক্ষে তাহসিন আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে রাম ভোজন কৈরি জানান, এখন চা শ্রমিকরা দৈনিক মজুরি ১০২ টাকার বদলে ১২০ টাকা পাবেন। আর ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এখন বকেয়া হিসেবে মজুরির সঙ্গে আপাতত অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা করে পাবেন শ্রমিকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার একটি প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আর পূর্ণাঙ্গ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে শ্রমিকরা বর্ধিত উৎসব বোনাস পাবে বলেও জানান চা শ্রমিক ইউনিয়নের এই কেন্দ্রীয় নেতা।
তবে এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চা শ্রমিক সন্তানদের সংগঠন জাগরণ যুব ফোরাম সভাপতি মোহন রবিদাস। তিনি বলেন, শ্রমিকরা দৈনিক মজুরি দাবি করেছে ৩০০ টাকা। আর মালিক পক্ষ দিচ্ছে ১২০ টাকা করে। এই সিদ্ধান্ত অমানবিক। চা শ্রমিকদের নিয়ে নতুন করে আন্দোলনের চিন্তা ভাবনা চলছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর থেকে থেকে দেশের সব চা বাগানে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছে শ্রমিকরা। এমতাবস্থায় পুরো না হলেও কিছুটা দাবি মেনে নিয়েছে চা বাগানের মালিকরা। বর্তমান বাজার ব্যবস্থা তা অপ্রতুল হওয়ার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক চা শ্রমিক।
-কেএম