গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ

অনলাইনঃ

দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত চলছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে। তবে এ তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় তাকে পদোন্নতি দিয়ে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী করা হয়েছে।

একটি পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প (১৩৩ কোটি টাকার) বাস্তবায়নে ১৩ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পর গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনেও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে আশরাফুল ও তার সহযোগীদের দুর্নীতির তথ্য উল্লেখ আছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আশরাফুল ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে গত বছরের (২০১৯) আগস্টে। আশরাফুল ও তার স্ত্রীর কাছে সম্পদের বিবরণী চেয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়ে আশরাফুল আলম বলেন, ‘যে কেউ অভিযোগ দিলেই দুদক চিঠি পাঠায়। অনুসন্ধানের পর বোঝা যাবে তারা কী চায়, আর কী পেয়েছে।’

নিজেকে সৎ দাবি করে আশরাফুল আলম। বলেন, ‘দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’

বিসিএস ১৫তম ব্যাচের প্রকৌশলী আশরাফুল আলম ১৯৯৫ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে উপ বিভাগীয় প্রকৌলী, ২০০৭ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী, ২০১৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ২০১৮ সালে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-১, মেডিক্যাল কলেজ ডিভিশন, গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল এবং রংপুর গণপূর্ত জোনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এসব জায়গায় দায়িত্ব পালনের সময় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, আশরাফুলের গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার দিগদাইর গ্রামে। তার ঢাকার ঠিকানা হলো- ফ্ল্যাট নম্বর-৫/এ, বাড়ি নম্বর-২১, রোড নম্বর-৪৯, গুলশান-২।

আশরাফুলের বিরুদ্ধে দুদকে যত অভিযোগ

১. কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীম সিন্ডিকেটের ১৫ ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসূত্র আছে আশরাফুল আলমের। ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে প্রতিটি প্রকল্প থেকে ১৫ শতাংশ কমিশন পান তিনি।

২. গণপূর্ত অধিদপ্তরের শেরেবাংলা নগর ডিভিশন-১ এ এক সময় নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন আশরাফুল আলম। সেখানে দায়িত্ব পালনের সময় ২০০৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিমাসে ৩ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়ে ৩০০ জনকে ভাউচার ভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগ দেন।

৩. ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

-ডিকে

FacebookTwitter