অনলাইন ডেস্কঃ
দীর্ঘ আড়াই বছর পর রাজধানীর নয়া পল্টনে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশাল সমাবেশ করলো। দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত এ সমাবেশ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওযার ডাক দিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ক্ষমতা নয় অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে না। আজকে গণতন্ত্রের জন্য মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য একটি সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো, পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এ বিক্ষোভ সমাবেশকে ঘিরে সকাল থেকেই দলীয় নেতা কর্মী সমর্থকরা আসতে শুরু করেন নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে।
বেলা ৩টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টার পরপরই নয়া পল্টনমুখী হতে থাকেন নেতা কর্মীরা। বেলা ১২টার দিকেই ব্যানার ফ্যাস্টুন প্লাকার্ড সমাবেশ স্থলে জড়ো হওয়া নেতা কর্মীদের ভীড় বাড়তে থাকে। তবে পুলিশের শর্তের কারণে নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে অবস্থান নেন দুটার পর।
তীব্র গরম উপেক্ষা করে বেলা বেলা আড়াইটার ভেতরই নেতা-কর্মীরা ফকিরাপুল থেকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে অবস্থান নেন।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে গণতন্ত্রের জন্য মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য একটি সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো, পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অবশেষে পাথর সরানোর জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী নিয়োগ দিতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৮ বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত জোটকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা কে রাজনৈতিক ৯টি দল মিলে জোট গঠন করেছে। সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাব ঐক্য গড়ে তোলার। আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করা হবে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করবেন না কারণ আপনারা জানেন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে আপনাদের পরাজয় হবে।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রত্যকটি মানুষ ভয়ে আছে। তারা জানে না যে কখন গুম হয়ে যায়। কোটা আন্দোলনকারীদের তুলে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। তাদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। নির্যাতন করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। আজকে ছাত্রলীগের যে ভূমিকা খানের শাসনামলে বাহিনীর ভূমিকার চেয়েও ভয়াবহ। আজকে যারা কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করছে তাদের মায়েরা বলছে আমার ছেলের চাকরি চাইনা, আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দাও।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, বাংলাদেশ আজ কেউ নিরাপদ নয়। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য নয়, এমপি মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়, এদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেবার জন্য আমরা একটা পরিবর্তন চাই। আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেতে চাই। স্বাধীনতা ফিরে পেতে চাই আমরা নির্ভয়ে চলার অধিকার ফিরে পেতে চাই।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, ভাইস-চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, গণশিক্ষা বিষয়হ সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল সালাম আজাদ,স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, সাধারণ সম্পাদক করামুল হাসান মিন্টু প্রমুখ।
-ডিকে