আইন আদালতঃ
সদ্য সমাপ্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আলেয়া সারোয়ার ডেইজিসহ তিন কাউন্সিলর প্রার্থীকে জিতিয়ে দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। ওসি ও ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে তিন কাউন্সিলর প্রার্থীকে প্রতারণার খপ্পরে ফেলা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তিন কাউন্সিলর প্রার্থী আদাবর ও মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তে দুই প্রতারকের নাম উঠে আসে। শনিবার রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তারা হলেন- প্রতারক চক্রের মূলহোতা সাইদুল ইসলাম বিপ্লব ও তার সহযোগী পলাশ ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অপারেটরের ২৯টি সিম, মোবাইল, ব্যাংকের চেক, ৪০ হাজার টাকা ও ১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের এসি মো. রওশানুল হক সৈকত জানান, চক্রটি ডিএমপির দুই থানার ওসির মুঠোফোন ক্লোন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন কাউন্সিলর প্রার্থীকে জিতিয়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ করে। প্রতারক চক্রটি সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও থানার ওসিদের নম্বর ক্লোন করে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান, ১৯ জানুয়ারি ডিএনসিসির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আবুল কাশেমকে এবং ২২ জানুয়ারি একই ওয়ার্ডের মো. ইয়াছিন মোল্লাকে আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে জিতিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয় প্রতারকরা। বিনিময়ে দুজনের কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। দুই প্রার্থীই টাকা দিতে রাজি হন। তাদের মধ্যে আবুল কাশেম ৭ লাখ এবং ইয়াছিন মোল্লা ৫ লাখ টাকা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। এরপর ২৪ জানুয়ারি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আলেয়া সারোয়ার ডেইজিকে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নম্বর থেকে ফোন দেয়া হয়। তার কাছেও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে প্রতারকরা। তিনিও ৫ লাখ টাকা দেন। পরে দ্বিতীয় দফায় আবার টাকা চাইলে ওই তিন প্রার্থী বুঝতে পারেন, তারা প্রতারিত হয়েছেন। এরপর তারা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। তিনজনই এ ঘটনায় তিনটি মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব জানান, ঘটনার তদন্তে নামে তেজগাঁও বিভাগের একাধিক টিম। প্রায় ১৫ দিন পর পুলিশ চক্রটির দুজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা জানিয়েছে, তারা ওসিদের নম্বর স্পুফিং (কল স্পুফিং হলো প্রকৃত নম্বর গোপন রেখে অন্য এক ব্যবহারকারীর নম্বর, অথবা বিশেষ কোনো নম্বর দিয়ে কল করার প্রযুক্তি) করে এ প্রতারণা করেছে। তারা একটি ভিওআইপি সার্ভিস থেকে নিবন্ধন নিয়ে অ্যাপসের মাধ্যমে নম্বর স্পুফিং করত।

চক্রটি বিশেষ দুটি অ্যাপস ব্যবহার করে ২০১৭ সাল থেকে পুলিশসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর স্পুফিং করে ৮১১টি প্রতারণা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

-ডিকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily