উত্তরে সভাপতি শেখ বজলু ও দক্ষিণ সভাপতি মান্নাফি

রাজনীতিঃ

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে উত্তরে সভাপতি হয়েছেন শেখ বজলুর রহমান। আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এস এ মান্নান কচি। অন্যদিকে, ঢাকা মহানগ দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহাম্মদ মোহাম্মদ মান্নাফি এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন হুমায়ুন কবির।

৩০ নভেম্বর, শনিবার বিকেলে রমনার বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আওয়ামী নেতাকর্মীদের পদচারণায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পূর্ণ হয়ে যায়।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ বিভক্ত হওয়ার পরে এটাই প্রথম সম্মেলন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আসলে টাকা বানানো একটা রোগ-ব্যারাম, এটা একটা অসুস্থতা। কারণ যে একবার বানাতে থাকে সে তার টাকা বানাতেই ইচ্ছে করে। কিন্তু এ টাকায় শান্তিতে ঘুমানো যায় না।

তিনি বলেন, কেউ অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করবেন, বিলাসবহুল জীবন যাপন করবেন আর কেউ সৎভাবে জীবন যাপন করে সাদাসিধে জীবনযাপন করে তার জীবনটা নিয়ে কষ্ট পাবেন, তা হতে পারে না। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বিরিয়ানি পোলাও খাওয়া আর ব্র্যান্ড পরা থেকে সাদাসিধে জীবনযাপন করা অনেক সম্মানের। অন্তত সারাক্ষণ অবৈধভাবে চোরা টাকা, এটা মনে আসবে না; শান্তিতে ঘুমানো যাবে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু ওই টাকার (অবৈধ) ফলে ছেলে-মেয়ে বিপথে যাবে। ছেলে মেয়ের পড়াশোনা নষ্ট হবে, মাদকাসক্ত হবে। সেগুলো দেখার সময় নাই। টাকার পেছনে ছুটতে ছুটতে তো নিজের পরিবার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। এই ধরনের একটা সামাজিক অবস্থা আমরা চাই না। আমরা চাই সৎ পথে কামাই করে যে চলবে, সে সম্মানের সঙ্গে চলবে। সৎ পথে কামাই করে যে থাকবে সে সমাজে সম্মান পাবে।

আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীকে সৎভাবে জীবনযাপন করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চোরা টাকা, দুর্নীতির টাকা নিয়ে যতই বিলাসিতা করুক মানুষ মুখে হয়তো বাহবা দিবে, পেছনে হয়তো একটা গালিও দিবে- ‘ওই বেটা দুর্নীতিবাজ, চোর’। সেই গালিটা হয়তো শোনা যাবে না, বোঝা যাবে না। কিন্তু সেই গালিটা খেতে হয়। এই কথাটা মনে রাখতে হবে, জাতির পিতা সারাজীবন সাদাসিধে জীবনযাপন করে গেছেন। কাজেই আপনারা যারা তার আদর্শের সৈনিক সেই অনুযায়ী চলতে হবে।

এসময় জাতির পিতার কন্যা নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পানি ও বিদুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাস থেকে খাবার খেয়ে বাইরে ফলা যাবে না। প্রয়োজনে বাসে বিন রাখতে হবে।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা মেয়েদের জন্য বাস কিনি, ওরা জ্বালিয়ে দেয়। আমরা গড়ি, ওরা ধ্বংস করে। ওরা (বিএনপি) ধ্বংস করতে পারে সৃষ্টি করতে পারে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে।

ভোট জালিয়াতি করে যে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিলো সেই দলে নেতাদের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করা মানায় না বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের সব অর্জনই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হয়েছে।

তিনি বলেন, ভোট জালিয়াতি করে যে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিলো সেই দলে নেতাদের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করা মানায় না। পাকিস্তানীদের দেখানো পথে বিএনপি-জামায়াত দেশজুড়ে বিভৎস অত্যাচার করেছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের স্বার্থে দেশের মানুষকে হত্যা করাসহ সম্পদ ধ্বংস করেছে বিএনপি। খালেদা জিয়া এবং তার ছেলেদের দুর্নীতির কথা দেশের মানুষ এখনো ভুলেনি।

সন্ত্রাস-সহিংসতা বিএনপির পুরানো অভ্যাস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদের হাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন করা আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য।

-কেএম

FacebookTwitter