মিলি সুলতানা, কুইন্স, নিউইয়র্ক থেকেঃ
আমেরিকার নার্সিংহোমগুলোতে পনেরো লাখ মানুষ বাস করে। কিছু অভিযোগ আছে নার্সিংহোম বা রিহ্যাবিলিটেশনের ক্ষেত্রে। ব্রুকলিনের একটি নার্সিংহোমের কথাই বলি। “Crown Heights Center for Nursing & Rehabilitation”– এই নার্সিংহোমে গত পাঁচবছর ধরে আছেন গ্রেস মেরি বেকার নামের ১০৫ বছরের এই বৃদ্ধা। তাঁর যমজ দুইকন্যা প্রতিদিন মাকে দেখতে আসতো। দুইবোন পালাক্রমে খাবার নিয়ে আসতো মায়ের জন্য। খাইয়ে দিতো, ডায়াপার চেঞ্জ করে দিতো, বেডসোর ক্লিন করে ওষুধ লাগিয়ে দিতো।

কিন্তু গত দুই সপ্তাহ থেকে গ্রেস মেরির কন্যারা তাদের মাকে দেখতে যেতে পারছেনা, করোনা পরিস্থিতির কারণে। নার্সিংহোমের নাম্বারে ফোন করেও তারা তার মায়ের কোন খবর জানতে পারছেনা। যমজ দুইবোনের কান্নাকাটির শেষ নেই। তাদের বুকে মাকে হারানোর অশনি সংকেত। মনের হাজারো রকমের দুর্ভাবনা থেকে নার্সিংহোম চলে যায় দুইবোন। স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাসের কারণ দেখিয়ে তাদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

দুইবোনের একজন গ্যারি বেকার বললেন, গত পনেরো দিন থেকে আমার মায়ের কারেন্ট পরিস্থিতি কিছুই আমরা জানিনা। আমাদের মা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা সেটাও আমাদের জানানো হচ্ছেনা। নার্সিংহোম অথোরিটির সাথে কথা বলেছি। ওরা আমাদের দুই মিনিট সময় দিতেও রাজি নয়। কেবল বলা হল, আমরা নতুন রোগী করোনা নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের বিরক্ত করোনা।
আমাদের দম ফেলবার ফুরসত নেই…….. ইত্যাদি।

গ্যারি বেকার বলেন, আমরা দুইবোন জানিনা আমাদের মায়ের ভাগ্যে কি ঘটেছে। আমাদের মা বেঁচে আছে কিনা জানিনা। দুই সপ্তাহ আগে শেষবারের মত মাকে দেখেছিলাম। মাকে দেখে ফিরে যেতে যাওয়ার সময় মা আমার হাতটা টেনে ধরে বললেন, “আর কিছুক্ষণ মায়ের পাশে বস। আজ বুকে ব্যথা হচ্ছে। তোদের দুইবোনের কথা ভেবে বুকটা খুব জ্বলছে……..!” গ্যারি বেকার বলেন, কেন এমন ফিলিং হচ্ছে জানিনা। মনে হচ্ছে আমাদের মাকে ট্রানজিশন্ড করা হয়েছে। মনে হচ্ছে মায়ের ফিউনারেল পর্ব সম্পন্নের জন্য ডাকা হবে আমাদের। আমাদের মা সত্যিই কি আর বেঁচে নাই? কোথায় আমাদের মা??

-শিশির

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily