মিলি সুলতানা, কুইন্স, নিউইয়র্ক থেকেঃ

ফক্স টিভিতে দেখলাম একজোড়া বাংলাদেশী বেঈমান দম্পতিকে। আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় বসবাস করছিল শহিদুল গাফফার খান ও নাবিলা খান দম্পতি। রেষ্টুরেন্ট খুলেছে শহিদুল নাবিলা।

ব্যবসার লাভের টাকা দিয়ে এই দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় আইএসকে অর্থায়ন করছিলো। আইএসের সাথে দুর্দান্ত গতিতে সম্পৃক্ত নাবিলা খান। পেনসিলভানিয়ার ফেডারেল আদালতে শহীদুল গাফফার (৪০) এবং তার স্ত্রী নাবিলা খান (৩৫) দম্পতি বুধবার জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়া দুইভাইকে ২০১৫ সাল থেকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ অপরাধে তাদের পাঁচ বছরের জেল এবং আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে।

জেল খেটে মুক্তি পাওয়ার পর আরো তিন বছর তাদের বিশেষ নজরদারিতে থাকতে হবে।

এই দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সিরিয়ায় আইএসে যোগ দেওয়া নাবিলার দুই ভাই জেকে এবং আইকে কে (পুরো নাম প্রকাশ না করে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ তাদের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ প্রকাশ করেছে) গত কয়েক বছরে তারা ‘বিপুল পরিমাণ’ অর্থ পাঠিয়েছেন।

তাদের মধ্যে আইকে গতবছর সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন। ম্যারিল্যান্ড স্টেটের বাল্টিমোর থেকে কয়েক বছর আগে ফিলাডেলফিয়ায় এসে বসবাস শুরু করেন বাবু ও নাবিলা। সেখানে ‘দেশি ভিলেজ’, ‘নিউ দেশি ভিলেজ’ নামে দুটো রোস্তারাঁ আছে তাদের।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ক্যাটারিংয়ের কাজও করতো তারা। বগুড়ার ছেলে শহিদুল গাফফার বাবু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেলেও তার স্ত্রী নাবিলা এখনো গ্রিনকার্ডধারী। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী হিসেবে তারা কমিউনিটিতে পরিচিত।

তবে কট্টরপন্থি আচরণের কারণে তাদের নিয়ে আগে থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সন্দেহ ছিল।

মামলার নথিতে বলা হয়, নাবিলার বড়ভাই জেকে বাংলাদেশ থেকে সিরিয়ায় যান ২০১৫ সালে। সিরিয়ায় যাওয়ার খরচ যোগাতে নাবিলা তার কিছু সোনার গয়না বিক্রি করে দিতে বলেছিলেন তার বোনকে, যিনি বাংলাদেশেই থাকেন।

বড়ভাইকে বিদায় জানাতে ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে নাবিলা বাংলাদেশেও গিয়েছিলেন। আর বাবু ফিলাডেলফিয়া থেকে তার শাশুড়িকে লিখেছিলেন, “আপনার ছেলে ‘মহান দায়িত্ব’ পালনে সিরিয়া যাচ্ছে, সেজন্যে আপনার ‘গর্ব করা উচিত।

” নাবিলার আরেক ভাই আইকে ২০১৩ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি বোন-দুলাভাইয়ের সঙ্গেই ছিলেন।

ইউএস অ্যাটর্নি উইলিয়াম এম ম্যাকসোয়াইন বলেন, “নাবিলা খানের দুই ভাইকে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসে যোগ দিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হতে উৎসাহ দিয়েছেন এই দম্পতি।”

ফক্স নিউজ জানায়, এ অভিযোগের বিচারে গাফফার খান ও নাবিলা খানের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে।

শুধু তাই নয়, মুক্তি পাওয়ার পর আরও তিন বছর থাকতে হতে পারে নজরদারিতে। ফিলাডেলফিয়ায় এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট ইনচার্জ মাইকেল জে. ড্রিসকোল বলেন, এ ঘটনাই বলে দেয়, প্রাণহানি এবং বড় ক্ষতি করার জন্য উগ্রপন্থিদের শুধু অস্ত্র হাতে নিতে হয় না, এভাবেও তারা ক্ষতিকর কাজ করতে পারে।

এই বেঈমানরা আমেরিকায় নাগরিকের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমেরিকার ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করছে। এসব গাদ্দারদের কারণে আমাদেরকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এই কারণে ইমিগ্রেশন আইন পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন।

সূত্র: ফক্স

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily