অতিথি নরেন্দ মোদি ঢাকায় এসে কি করবেন কোথায় যাবেন

অতিথি নরেন্দ মোদি ঢাকায় এসে কি করবেন কোথায় যাবেন
অতিথি নরেন্দ মোদি ঢাকায় এসে কি করবেন কোথায় যাবেন

কূটনৈতিক ডেস্কঃ

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বাংলাদেশে আসছেন মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই মূলত তার দুদিনের এই সফর।

বাংলাদেশ মনে করছে, বন্ধু রাষ্ট্রটির সরকার প্রধানের এই সফর কূটনৈতিক সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তিকে করবে অনন্য এবং জাতির ঐতিহাসিক দুই আয়োজনকে নিয়ে যাবে বিশেষ উচ্চতায়।

অন্যদিকে ভারত মনে করছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর দুই দেশের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় হতে যাচ্ছে। এই সফর হতে যাচ্ছে সর্বাত্মক সহযোগিতার এক মাইলফলক, যা অন্য সব দেশের অনুসরণযোগ্য।

২০১৫ সালের ৬ থেকে ৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ঢাকা সফর করেন। এবার তিনি দ্বিতীয় দফায় ঢাকা সফরে আসছেন।

ঢাকা সফরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তিনি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। সফরে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতার তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।

এছড়া দুই নিকট প্রতিবেশীর বন্ধুত্ব সুসংহত করে আগামী ৫০ বছরে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে দিকনির্দেশনার ওপর জোর দেওয়া হবে। দুই শীর্ষ নেতার আলোচনায় ঐতিহাসিক উপাদান, দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা, জ্বালানি ও উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়গুলোর পাশাপাশি সম্পর্কের পর্যালোচনা হবে।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরে মুজিবনগর স্বাধীনতা সড়ক, ঢাকা-জলপাইগুড়ি যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস, বঙ্গবন্ধু- বাপু মিউজিয়াম উদ্বোধন করবের দুই নেতা।

মোদি যাবেন গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়াতেও। এছাড়া সাতক্ষীরার কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের হরিমন্দিরে পূজা দেওয়ার কথা রয়েছে মোদির।

শুক্রবারের সফরসূচি-

শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর আনুষ্ঠানিকতা সেরে তিনি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।

এরপর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ২৬ মার্চ বিকেলে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে স্বাধীনতা দিবসের ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেবেন।

শনিবারের সফরসূচি-

টুঙ্গিপাড়া
২৭ মার্চ হেলিকপ্টারে করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রথমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। তাকে স্বাগত জানেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন মোদি।

যশোরেশ্বরী কালীমন্দির ও ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি
এর পর তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যাবেন। সুন্দরবনঘেঁষা সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুরে যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে যাবেন নরেন্দ্র মোদি।

এরপর কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের হরিমন্দিরে পূজা করবেন এবং ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

নরেন্দ্র মোদির ওড়াকান্দি সফরকে অনেকটা রাজনৈতিক বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনে মতুয়াদের ভোট টানতে তিনি ওড়াকান্দি যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ সালে ওড়াকান্দিতে জন্মেছিলেন। তাই এর সঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের বিশেষ আবেগ জড়িত। মতুয়াদের একটা বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও নদীয়া জেলায় বসবাস করে। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহার ও বর্ধমানের কিছু এলাকায়ও আছেন অনেকে। সেখানকার ভোটের রাজনীতিতে তাদের প্রভাব রয়েছে।

আরও পড়ুন:

শেখ হাসিনা-নরেন্দ্রমোদির বৈঠক
২৭ মার্চ সন্ধ্যায় বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে দেশটির সঙ্গে ৩টি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো দুর্যোগ মোকাবেলা সহযোগিতা। আর বাকি দুটি হলো- দুই দেশে ইনস্টিটিউটশনের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতা।

-কেএম

FacebookTwitter